মাদারবোর্ডের খুটিনাটি তথ্য

মাদারবোর্ড হল ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মত জটিল ইলেকট্রনিক সিস্টেম এর মূল সার্কিট বোর্ড। মাদরবোর্ডকে কখনও কখনও মেইনবোর্ড বা সিস্টেম বোর্ড -ও বলা হয়। তবে ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে এটিকে লজিকবোর্ড বলা হয়। মাদারবোর্ডের মাধ্যমে কম্পিউটারের সকল যন্ত্রাংশকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করা হয়।

দুটি কোম্পানীর বেজে (AMD, Intel) বিভিন্ন কোম্পানীগুলো মাডারবোর্ড প্রস্তুত করে থাকে। পূর্বে ইন্টেল ব্যান্ড হিসাবে নিজেরাই মাডারবোর্ড বাজারজাত করত। বর্তমানে বন্ধ রেখেছে তবে ইউরোপ, আমেরিকার কিছু জায়গাতে চালাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকের অভিমত অন্যদের মত সস্তাতে ইন্টেল মাডারবোর্ড দিতে পারবেনা এবং তাদের রেপুটেশন নষ্ট করতে চাই না বলেই সম্ভাবত এশিয়াতে তা বন্ধ রেখেছে। আরেকটি বিষয় আমরা ইন্টেল মাডারবোর্ড হিসাবে যে নামে চিনতাম সেটি প্রস্তুত করত ফক্সকন নামে একটি কোম্পানী। যাইহোক ইন্টেল ব্যতিত বর্তমানে বেশ কয়েকটি কোম্পানী রয়েছে যারা বিশ্বখ্যাত, মাডারবোর্ড প্রস্তুতকরনে এ রেটিং এ- আছে। তারা হল- Asus, Gigabyte, MSI, Asrock অন্যতম। এদের বোর্ডের দামও কিছুটা হলেও বেশী।

এর পরের অবস্থানে আছে Biostar, ECS, Mercury, Foxconn। এবং বাজারে আরো শত রকম নামের বোর্ড রয়েছে তবে তার অধিকাংশই নন ব্যান্ডের চাইনা হতে অর্ডারকৃত নামের। আপনার যদি ২-৩ কোটি টাকা থাকে তাহলে আপনিও আপনার নামে মাডারবোর্ড ছাড়তে পারবেন। তাই বোর্ড ক্রয়ের সময় অরজিনাল ব্যান্ড দেখে ক্রয় করাটা ভাল। এখানে ব্যক্তিগতভাবে আমার সবচেয়ে ভাল লাগে ও বিশ্ব জরিপে এগিয়ে আছে তাহলো Asus, Gigabyte কোম্পানী। দুটি প্রতিষ্ঠানই অসংখ্যক পুরস্কার ও খ্যাতি পেয়েছি। দুটি প্রতিষ্ঠানই ভিন্ন আঙ্গিকে, ডিজাইনের বোর্ড তৈরির চেষ্টা করে। যেমনঃ প্রথম পেন্টেড বাজারে ডুয়াল বায়োস সুবিধা মাডারবোর্ড এনেছিল গিগাবাইট। ডুয়াল প্রসেসর সমর্থিত বোর্ড এনছিল আসুস। তারা প্রতিনিয়তই প্রযুক্তিগত আপডেট করছে।

বিশ্বখ্যাত মার্ডারবোর্ড প্রতিষ্ঠান Asus, Gigabyte, MSI, Asrock তাদের মাডারবোর্ড গুলোতে যে প্রযুক্তি সংযোগ করছে তা নিম্নরুপঃ

  • Xpress Recovery2 Introduction

এই টেকনোলজীর মাধ্যমে আপনার অপারেটিং সিস্টেম ক্রাশ করলে কিংবা ডিলেট হয়ে গেলে পূনরায় রিস্টোর করা যাবে এমনকি প্রয়োজনে ব্যাকআপ রাখা যাবে।

  • Q-flash bios 

বায়োস পদ্ধতির এটি একটি অভিনব পদ্ধতি। এমনিতেই বায়োস আপডেট করা হয়েছে। তথাপি বায়োসের তথ্য গুলো আপনার পেন ড্রাইভ কিংবা মেমোরি কার্ডে সংরক্ষন করা যাবে। কোন ক্রমে বায়োস ক্রাশ করলে মেমোরি কার্ড হতেই রিস্টোর করা যাবে।

  • Ultra Durable 3

এখানেও আধুনিক টেকের সমন্বয় প্রকাশ করা হয়েছে। পূর্বের তুলনায় মাডার বোর্ডে অনেক যন্ত্রাংশ যেমন- ক্যাপাসিটর, রেজিঃ সংখ্যা কমানো হয়েছে এবং যা ব্যবহার করা হচ্ছে তা প্রভূত উন্নতি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় সবাই কমবেশী সলিড ক্যাটাসিটর, ফেরিট কোর, মসফেট ব্যবহার করছে। যেখানে উল্লেখ থাকছে ক্যাটাসিটর গুলোর আয়ুকাল প্রায় ৫০,০০০ ঘন্টা এবং অধিক তাপমাত্রাতেও পিসির কোন ক্ষতি হবেনা, ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা  হলেও তা চলতে থাকবে।

  • Dynamic Energy Saver

এই পদ্ধতিতে আপনার মাডারবোর্ডকে ক্লকিং স্পীডে মুড করতে পারবেন। বিভিন্ন যন্ত্রাংশের তাপমাত্রা জানতে পারবেন ও কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আনা যাবে। তথাপি বোর্ডগুলোতে বর্তমানে ROHS পদ্ধতির সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। বর্তমানে মাডারবোর্ডের সংযোগ হতে আপনার মোবাইল জাতীয় ডিভাইসগুলো চার্জ দেওয়া যাবে।

AMD ও Intel হল দুটি মেরু। যেখানে ২ রকম সুবিধা বিদ্যমান। আমাদের উপ-মহাদেশ সহ এশিয়া মহাদেশে Intel অনেক জনপ্রিয়। সেই হিসাবে AMD কিছুটা হলেও নতুন। উপরন্তু ইউরোপ- আমেরিকা মহাদেশে AMD এর জয় জয়কার অনেকটা বেশী। তবে আমাদের Intel হতে AMD এর সমর্থিত প্রসেসরের দাম অনেকটা সাশ্রয়ী, বিশেষ করে বিল্টইন গ্রাফিক্স কার্ডের পারফরম্যন্স অনেক বেশী এবং তারাই ১ম থ্রিডি বৈশিষ্ট্য যুক্ত করেছিল তাদের প্রসেসরে। মনে করা হয়, বিশেষত তাদের মার্কেট সম্প্রসারন ও পন্যের গুনাগত মান বুঝানোর জন্য তাদের প্রসরের দাম অনেকটা কম। একটি উদাহরন হিসাবে বলিঃ যেখানে ইন্টেলের কোর আই-৭, ৪ মেগাবাইট ক্যাশ বিশিষ্ট প্রসরের দাম প্রায় ২০,০০০৳। সেখানে আপনি এরুপ সমমানের ৪ কোর বিশিষ্ট AMD প্রসেসর পাবে প্রায় ১০,০০০ টাকাতে যেখানে ক্যাশ মেমোরি প্রায় ৮ এমবি।

তথাপি গেমিং পারফরম্যান্স এর জন্য AMD প্রসেসরের কোন তুলনাই হয়না। তবে AMD বেইজ যুক্ত প্রসেসর/মাডারবোর্ড গুলো অতিরিক্ত তাপ তৈরি করে যাতে মনে হয় বোর্ডের ক্যাপাসিটরগুলো বোধ হয় উড়ে যাবে। অপরদিকে Intel এর এই সব বালাই নাই। সব Cool & Silent. ব্যক্তিগতভাবে দুটো কোম্পানীরই ব্যবহার করার সুবিধা হয়েছে। তবে মনে হয়েছে কি কারনে যেন তাপ বেশী হলেও এমএমডির গতিতা বেশী। যাইহোক আমার কথা শুনে হয়ত Intel অনুগামীরা খ্যাতে যেতে পারেন। এখানে মূলত আমি তর্কের জন্য আসি নাই, বিষয় গুলো শেয়ার করতে এসেছি। এবং মূল কথা হল আপনি যেটিই ক্রয় করুন না কেন তা ব্যান্ড দেখে ক্রয় করাটা ভাল।